ডায়াবেটিস রোগীরা মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলেও খেতে পারে না। তাদের অনেক খাবার খেতে বারণ কর হয় যাতে তারা সুস্থ থাকেন । কিন্তু মিষ্টি ফল খেলে কি ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা হয় ? আজকের ভিডিওতে আমরা, সেটা নিয়েই আলোচনা করব।
আম …কি বন্ধুরা শুনে জিভে জল চলে এলো? আম এমন একটা ফল যা আমাদের সবারই প্রিয়।ছোট ,বড়, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কে না খেতে ভালোবাসে আম? কিন্তু ডায়াবেটি রোগীদের ক্ষেত্রে কি আম খাওয়া উচিত হবে ? বন্ধুরা আম খুবই পুষ্টিকর ফল। আমের মধ্যে Vitamin, Mineral, Fibre প্রচুর পরিমাণে থাকে। পাশাপাশি আমের মধ্যে কিন্তু সুগারের পরিমাণ খুবই বেশি থাকে।
আর এই কারণেই ডায়াবেটিস রোগীদের আম খেতে বারণ করা হয়। কিন্তু আমের মধ্যে শুধুই সুগার থাকে না। সুগারের পাশাপাশি Fibre এর পরিমাণও বেশি থাকে এবং কিছু এন্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা আপনাদের জন্য অনেক বেশি উপকারী হয়। আমরা যখন আম খাই তখন আমের মধ্যে থাকা ফাইবার সুগার কে খুব সহজেই Absorption করতে সাহায্য করে।
যার জন্য আমাদের রক্তের ভেতরে থাকা সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে না। পাশাপাশি আমরা যদি কথা বলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নিয়ে, তাহলে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরে থাকা রক্তে সুগারে পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে তার থেকে সৃষ্টি হওয়া ট্রেস ও ড্যামেজকে কমাতে সাহায্য করে। মানে যেসব নেগেটিভ এফেক্ট আসে আমাদের শরীরের সুগারের জন্য, তা কমাতে সাহায্য করে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটা আমের মধ্যে পাওয়া যায়। আর এই দুটো জিনিসের জন্যই আমাদের শরীরের মধ্যে ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার ফলে যে ক্ষতি হয় তার থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । এর জন্যেই ডায়াবেটিস রোগীরা একটু হলেও আম খেতে পারেন।
কিন্তু আমের সম্পর্কে , এই সামান্য টুকু জানার পরেই আপনারা যে, খুশি হয়ে আম খেতে শুরু করবেন, তা কিন্তু নয়। এখনো অনেক কিছু জানতে বাকি আছে আমের সম্বন্ধে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য।
বন্ধুরা ডায়াবেটিস পেশেন্টদের আম খাওয়া ঠিক হবে কিনা সেটা জানার আগে আমাদের অনেক কিছু জানতে হবে । যেমন Glycemic index…বন্ধুরা এই Glycemic index টা আসলে কি? Glycemic index এমন একটি জিনিস যা খাবারে থাকা বিভিন্ন ধরনের জিনিসগুলোকে Classify করে। According To Their Ability To Effect Your Blood Sugar । অর্থাৎ আপনার খাবারে যত পরিমান Glycemic index কম থাকবে আপনার ব্লাড সুগারে তার কোন এফেক্ট পরবে না।
Glycemic index এর পরিমাণ যদি 55 শতাংশের কম থাকে তাহলে আপনাদের শরীরে কোন ক্ষতি হবে না। যা ডায়বেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে safe বলে মনে করা হয় । আর আমের মধ্যে Glycemic index এর পরিমাণ 51 শতাংশ থাকায় যদি আপনারা আম খান তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ব্লাড সুগার বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু একটা জিনিসের প্রতি আপনাদের অবশ্যই নজর রাখতে হবে। সেটা হল আম low Glycemic index ওলা খাবার হলেও আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন তাহলে আম খাওয়ার সময় আপনাকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে, বেশি পরিমাণে আম খাওয়া চলবে না ।
যদি বেশি পরিমাণে আম খান তাহলে এটা low Glycemic index ওলা খাবার হলেও আপনার ডায়াবেটিস বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন তাহলে খুব কম পরিমাণে আম খাওয়া আপনাদের শরীরের পক্ষে ভালো।এক্ষেত্রে বলাই যায় প্রথমে অল্প পরিমাণে আম খেয়ে দেখা উচিত আপনার ডায়াবেটিসে এর কি প্রভাব পড়ছে । শুরুতে ৭০ থেকে ৮০ গ্রাম আম একবার সারাদিনে খাওয়ার পরে আপনি আপনার ব্লাড সুগার এর পরিমাণও মেজারমেন্ট করতে থাকুন। এই আম খাওয়ার ফলে আপনার ব্লাড সুগারে কি এফেক্ট পরছে, সেটার দিকেও অবশ্যই নজর রাখবেন। যদি এই আম খাওয়ার পরে আপনার ব্লাড সুগারে বেশি কোন এফেক্ট পড়তে না দেখেন তাহলে আপনি আস্তে আস্তে আম খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে পারেন ।
তবে তা একটা লিমিট পর্যন্ত । কতক্ষণ না দেখছেন আপনার ব্লাড সুগার এর পরিমাণ বেড়েছে ।কিন্তু আপনার যদি মনে হয় আম খাওয়ার পরে আপনার ব্লাড সুগারের পরিমাণ বেড়ে গেছে এবং শরীরে নানান ধরনের অসুবিধা দেখা দিচ্ছে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাদের আম খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া উচিত। আর যদি আম খাওয়ার পরেও আপনার ব্লাড সুগারের পরিমাণ না বাড়ে, তাহলে অবশ্যই আপনি অল্প পরিমানে আম খেতে পারেন।
আপনাদের অর্থাৎ যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা খুব অল্প পরিমাণে আম খাওয়ার সাথে সাথে ব্লাড সুগার টাও পরীক্ষা করে দেখতে থাকবেন যাতে ব্লাড সুগারের পরিমাণ বেড়ে না যায়। আম খাওয়ার পরিমান যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়। আর দ্বিতীয় জিনিস হল , আমের সাথে যদি আপনারা কোন ভালো প্রোটিনের source নেওয়া শুরু করেন, তাহলে ওই প্রোটিন আপনার শরীরে আমের থেকে পাওয়া সুগারের Absorption অনেক কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে । যেভাবে ফাইবার আমাদের শরীর থেকে সুগারের Absorption কমিয়ে দেয় সেই ভাবেই প্রোটিন আমাদের শরীরে থাকা সুগারের Absorption কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।
আমের মধ্যে ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকলো প্রোটিন থাকে না। তাই আপনারা যদি আমের সাথে কোন প্রোটিন জাতীয় জিনিস নিয়ে থাকেন তাহলে আমের থেকে পাওয়া সুগার Absorption এ সাহায্য করবে। তাহলে এক্ষেত্রে আপনারা একটা কাজ করতেই পারেন ,যখন আম খাবেন তখন আমের সাথে Protein জাতীয় কোন খাবার যুক্ত করে নিন । যেমন সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশ বা সিদ্ধ করা চিকেন বা পনীর বা সুগার ফ্রি জাতীয় প্রোটিন shake নিতে পারেন যা আপনাদের শরীরে প্রোটিনের Quantity বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে । তার ফলে আপনার শরীরের আম থেকে পাওয়া সুগার Absorption অনেক পরিমানে Slow Down হয়ে যাবে । তার ফলে আমের মধ্যে থাকা সুগার আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
তাহলে আমরা যদি এক কথায় বলতে চাই তালে বলাই যায়, ডায়াবেটিস পেশেন্টদের ক্ষেত্রে আম খাওয়া কোন মতেই ক্ষতিকারক নয়। কারণ ম্যাংগো একটা low Glycemic index যুক্ত ফল যেটা এক বারেই আপনার ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দেয় না। এর পাশাপাশি আম এ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , ফাইবার , আছে যেটা সুগারের Absorption কে Slow Down করে দেয় ।যার জন্য তুলনামূলকভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আম খাওয়া ক্ষতিকারক হয় না। কিন্তু একটা জিনিস সব সময় মাথায় রাখা উচিত ।একটা নির্দিষ্ট পরিমাণেই কিন্তু আম খেতে পারেন ডায়াবেটিস রোগীরা ।
Share to help