ঘুমের মধ্যে কিংবা হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ পায়ের পেশিতে টান ধরছে?

Rate this post

কিম্বা আড়মোড়া ভাঙতে গিয়ে অসুবিধা হচ্ছে ? কিন্তু আপনি কী জানেন কেন হয় মাসল ক্র্যাম্প? কী করলে সমাধান মিলবে ? উপায় বললেন চিকিৎসকেরা

হঠাৎ হঠাৎ হাত-পায়ের পেশীতে টান ধরে? সকালে প্রথম হাঁটা শুরু করলেই অনেকের পায়ের শিরার টান ধরে। কখনও বা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই বেঁকে যায় পায়ের আঙুল। হাতের ও কোমরের পেশীতেও টান ধরে যে কোনও সময়। আদতে এই টান ধরার পিছনে কি কারণ রয়েছে জানেন? 

ডিহাইড্রেশন। শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে এই টান ধরার প্রবণতা বাড়ে। সঙ্গে থাকে তীব্র যন্ত্রণা। চিকিত্‍সকদের মতে…

টোকোফেরল, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ-র অভাব, পটাশিয়ামের স্বল্পতা পেশিতে টান ধরার কারণ হতে পারে।

কেন পেশিতে টান ধরে? মূলত শরীরের ঐচ্ছিক পেশির সাহায্যে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়ার ফলে বিভিন্ন কাজ করতে সক্ষম হয় শরীর। এই পেশিগুলি সাধারণত সঙ্কুচিত বা প্রসারিত হয়। কখনও কখনও পেশিগুলি দীর্ঘ সময় সঙ্কুচিত হয়ে থাকে, প্রসারিত হতে পারে না। এই কারণেই পেশিতে টান ধরে। যাঁরা ক্রনিক কোনও রোগে ভুগছেন বা যাঁদের চোট-আঘাতজনিত সমস্যা আছে, তাঁদের পেশিতে টান লাগা স্বাভাবিক। কিন্তু যাঁদের এই সমস্যা নেই তাঁদেরও কিছু কারণে লাগতে পারে পেশিতে টান।

ঠিক কী কী কারণে পেশিতে টান ধরতে পারে?

ল্যাক্টিক অ্যাসিড: 

পেশির মধ্যে যদি ল্যাক্টিক অ্যাসিড অধিক মাত্রায় জমা হয় তাহলে তা পেশিকে সঙ্কুচিত করে রাখে, প্রসারিত হতে দেয় না। ফলে টান ধরে পেশিতে।

জলের ঘাটতি: 

আমাদের শরীরের ৯০ শতাংশই জল। শরীরে তরলের পরিমাণ যখন সঠিক থাকে অঙ্গগুলিও ঠিক মতো কাজ করে। জলের ভারসাম্য নষ্ট হলেই পেশিতে সঙ্কোচন দেখা যায়।

ভিটামিনের অভাব: 

সুস্থ থাকার জন্য যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো বিভিন্ন খনিজ পদার্থের প্রয়োজন, তেমনই বি-৬, বি-১২, সি-র মতো বিভিন্ন ভিটামিনের চাহিদা রয়েছে শরীরে। শারীরবৃত্তীয় কারণে যদি শরীরে ভিটামিন বা মিনারেলের তারতম্য হয় তবে পেশিতে টান লাগতে পারে।

কী ভাবে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলা সম্ভব? এর প্রতিকার হিসেবে চিকিৎসকেরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। সেগুলো কী কী আসুন জেনে নেওয়া যাক…

পটাশিয়ামযুক্ত খাবার: 

পটাশিয়ামযুক্ত খাবার পেশিতে টান কমাতে সাহায্য করতে পারে। পটাশিয়াম পেশি ও স্নায়ুর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়া কখনও কখনও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারও সুফল দেয়। আসলে প্রোটিন পেশি ও টিস্যুর সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে থাকে। 

পর্যাপ্ত জলপান: 

সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খান। শরীরে জলের ভারসাম্য রক্ষা করতে ডাবের জল বা লেবু-জলও খেতে পারেন। শরীরে পর্যাপ্ত জল থাকলে মেস ক্র্যাম্পের সম্ভাবনা কমে অনেকাংশে। 

শরীরচর্চার মধ্যেখানে বিরতি: এক নাগাড়ে কাজ না করে মাঝে মধ্যে সাময়িক বিরতি নিতে হবে। অনেক সময়ে শরীরচর্চা করতে গিয়ে পেশিতে টান ধরে। এমনটা হলে ব্যথা কমলে শরীরচর্চায় ফিরুন। তবে ব্যায়াম বন্ধ করে দেবেন না।

পেশিতে টান ধরার সমস্যা শুধু বড়দের নয় শিশুদের ক্ষেত্রেও হয়ে থাকে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে বেড়ে ওঠার সময় এমন লক্ষণ বেশি দেখা যায়। কোনও কোনও শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির সঙ্গে পেশির বৃদ্ধি সমতা বজায় রাখতে পারে না। তখনই পেশিতে টান ধরে। তবে সেক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Share to help

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *